Breaking News
recent

তোমাকে

বুঝতে পারছো,

ভীষণ মন খারাপ আমার ! কেন খারাপ কেমন খারাপ সেটা বলার ধৈর্যটুকুও নেই। বুঝতেই পারছো কত মন খারাপ আমার। এটা তোমাকে উদ্দেশ্য করে লেখা আমার প্রথম লেখা। প্রথম চিঠি।
তোমাকে দেখতে মন চায়, খুব করে ছুঁয়ে দেখতে মন চায়। অথচ তোমাকে না আমি চিনি, না তুমি আমাকে চেনো। তবু বলছি, তোমাকে উদ্দেশ্য করে। জানি না তোমার কাছে এই চিঠি পৌঁছবে কি না। তবু বলছি। কেন বলছি তাও জানি না। কী বলছি জানি না। আমার বলতে ইচ্ছে করছে। খুব খুব বলতে ইচ্ছে করছে আমার খুব মন খারাপ। তুমি হয়তো আমার এই খারাপ হওয়াটাকে ভালো করে তুলতে পারবে না, কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আমাকে বলতে হবে। কী বলতে হবে জানি না। কিছু একটা বলতে হবে। সেই কিছু একটা হয়তো এই কথাটাই। আমার খুব মন খারাপ।

পৃথিবীর কারো কোনো দায় পড়ে নি আমার লেখা পড়ার, আমার কথা শোনার, আমার মন ভালো করে দেবার। কিন্তু তোমাকে বলতে চাই আমি। কিছু বলতে চাই। হয়তো তুমি আমার মন ভালো করে দেবে। হয়তো দেবে না। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে তোমাকে আমার বলা উচিৎ। আমার ভালো লাগে না কিছুই এই কথাগুলো বলা উচিৎ। তুমি আমার কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনবে। পারলে কখনো মন্তব্য করবে। না করলেও সমস্যা নেই।
আচ্ছা তুমি কি বিরক্ত হচ্ছো?

বিরক্ত হলে থাক বলার দরকার নাই। কাউকে বিরক্ত করে নিজের মন ভালো করাটা বোধ হয় খুব একটা ভালো না। জানো, আমার এখন একটা শিশু হয়ে যেতে ইচ্ছে করছে। যে কিছুই জানে না। যে জানতে চায়।

সবার কাছেই আমি অহংকারী হতে চাই। এই অহংকারটাই আমার পুঁজি। অহংকার করব না তো কী করব? আমার মন বলে আমার অহংকার করা উচিৎ। ছোটবেলায় আমি খুব অহংকার করতাম। এই অহংকারটাই আমাকে অন্য সবার থেকে আলাদা করেছে। এতে করে সত্যি আমি অন্য কিছু হতে পেরেছি। আমার মনে হয়েছে অহংকার না করলে আমি অন্য কিছু হতে পারব না। সবাই যা হতে চায় আমি তা হতে চাই না। সবাই হয়োত নীতিবাগিশ হতে চায়, আমি চাই না। আমি একটা উশৃঙ্খল বাঁনর হতে চাই। একদিন দেখবে, খুব রাগ করে আমার এই অহংকারের যেসব কারণ সেসবও আমি খুব অহংকার করে ছুঁড়ে ফেলব। তখন কি কেউ আমাকে অহংকারী বলতে পারবে?

একমাত্র তোমার কাছে আমি অবোধ একটা বালক থাকতে চাই। আমার সমস্ত অহংকার তোমার পায়ের কাছে জড়ো করে একটু উষ্ণতার জন্য বসে থাকতে চাই। তুমি কি আমাকে একটু তোমার পায়ের কাছে বসে থাকার সুযোগ দেবে। আমার কথাগুলো হয়তো খুবই থার্ড ক্লাসের মনে হচ্ছে। বাজে রকম সেকেলে। কিন্তু তুমি বিশ্বাস করো, আমার হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে দেখো, আমি সত্যি বলছি।

তুমি কি আমাকে গ্রহণ করবে? আমি কোনো দিনই তোমাকে সোনা বলে ডাকতে পারি নি। একবার অন্তত ডাকতে চাই। বলতে চাই জাদুসোনা। লক্ষ্মী সোনা। জান পাখি। এগুলো হয়তো গ্রাম্য লোকেরা বলে। আমিও একটা গ্রাম্য। সেই গ্রাম্যটাকে গ্রহণ করার মতো বেহিসেবী হতে পারবে? এতটুকু ছাড় তুমি আমাকে দিতে পারো।

অনেক কথা বলতে ইচ্ছে করছে। তুমি কি আমাকে বলার সুযোগ দিবে?
আমাকে বলার সুযোগ দাও, বলতে দাও হৃদয়ের কথা, যেগুলো কোনো দিনই আমি বলতে পারি নি। হয়তো আর কোনো দিন বলতেও পারব না, যখন তুমি আমাকে একটা গ্রাম্য গাধা মনে করে এই লেখাটা ছুঁড়ে ফেলবে ডাস্টবিনে, আর এরপর কখনোই আর তোমার কাছে আমি বলার সুযোগ পাব না।

জানো, এই যে তোমাকে বিরক্ত করছি, আমি বুঝতে পারছি তুমি ভীষণ বিরক্তি বোধ করছো, কিন্তু কী করব বলো, আমাকে তো বলতে হবে; তোমাকে ছাড়া আমি আর কার কাছে গিয়ে বলব আমার কথা শোনো আমাকে বুঝতে চেষ্টা করো? কার কাছে গিয়ে বলব আমার মনটা খুব বিষণ্ন দাও না একটু ভালো করে। কার কাছে গিয়ে বলব, অহংকার করতে করতে আজ আমি নিদারুণ বিরক্ত।

কারো কোনো সময় নেই আমাকে বোঝার।

তুমি কি আমাকে বুঝতে চেষ্টা করবে? আমি কি কোনো দিন তোমাকে পাবো, যে আমার মন ভালো করে দেবার জন্য আসবে আমার জীবনে? আর কিছু চাই নে। শুধু মাঝে মাঝে আমার মনটা বিষণ্ন হয়ে গেলে তুমি একটা রঙিন প্রজাপতি হয়ে উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে আমার মনটা নাচিয়ে তুলবে। এটুকুই। আর কিছু না।

আমার খুব মন খারাপ। এটা জানার পর তুমি কি ব্যাকুল হবে আমার মনটা ভালো করে দেবার জন্য?

কবে আসবে তুমি?

মন বলছে তোমার আসার সময় হয়ে এসেছে। কিন্তু আসো না। কেন আসো না।

মন বলছে তুমি আমাকে দেখছো, আমার কথা শুনছো কাছে থেকে, আমার এই গাধা মার্কা কাজ কারবার তোমার ভেতর ভীষণ করুণাবোধ জন্ম দিচ্ছে। তোমার খুব খারাপ লাগছে। আমাকে দেখে। কিন্তু তুমি কাছে আসছো না। হয়তো আমারই ভুলে। আমি কখনোই বলি নি তোমাকে আমার কী ভীষণ প্রয়োজন।

এইবার তো বললাম, তোমার খুব প্রয়োজন। যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো।

No comments:

Powered by Blogger.