Breaking News
recent

গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত✈

বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় নদীর মোহনায় অবস্থিত গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত। এই সৈকতটি স্থানীয় মানুষজনের কাছে মুরাদপুর সৈকত নামেই বেশি পরিচিত। গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতটি সীতাকুণ্ড জেলার সীতাকুণ্ড বাজার থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
প্রকৃতি ও গঠনগত দিক থেকে এই সৈকতটি আমাদের দেশের অন্যান্য সমুদ্র সৈকত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এর একদিকে যেমন দিগন্ত জোড়া জলরাশি, আর অন্যদিকে কেওড়া বন দেখা যায়। কেওড়া বনের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের চারদিকে কেওড়া গাছের শ্বাসমূলগুলো স্পষ্ট দেখা যায়। এই বন সমুদ্রের অনেকটা গভীর পর্যন্ত চলে গেছে। এই সৈকতের পরিবেশ অনেকটা সোয়াম্প ফরেস্ট ও ম্যানগ্রোভ বনের মত।
পুরো সৈকত জুড়ে সবুজ গালিচার বিস্তীর্ণ ঘাস একে আর সব সমুদ্র সৈকত থেকে করে তুলেছে ভিন্ন। এই সৈকতের সবুজের মাঝ দিয়ে এঁকে বেঁকে চলে গেছে সরু নালা। নালাগুলো জোয়ারের সময় পানিতে ভরে ওঠে। আকাশের উড়ন্ত পাখি, সমুদ্রের ঢেউ আর বাতাসের মিতালীর অনন্য অবস্থান দেখা যায় এই গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকতে।
অল্প পরিচিত এই সৈকতে মানুষজনের আনাগোনা কম বলে আপনি পাবেন নিরবিলি পরিবেশ। সাগরের মতো অতটা ঢেউ বা গর্জন না থাকলেও এই নিরবিলি পরিবেশের গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকত আপনার কাছে ধরা দিবে ভিন্নভাবেই। চাইলে জেলেদের বোটে সমুদ্রে ঘুরে আসতে পারেন। এক্ষেত্রে দরদাম করে বোট ঠিক করে নিতে হবে।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে চট্রগ্রামগামী যে কোনো বাসে করেই যেতে পারবেন সীতাকুন্ড। বাসের সুপারভাইজারকে আগে থেকে বলে রাখলে সীতাকুন্ড নামিয়ে দিবে। এছাড়া ঢাকা থেকে সীতাকুন্ড মেইল ট্রেনে করেও সীতাকুণ্ড যাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম থেকে সীতাকুন্ড: চট্টগ্রাম থেকে সিএনজি বা অটোরিক্সা রিজার্ভ নিয়ে সীতাকুণ্ডে আসতে ভাড়া লাগবে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আর বাসে করে যেতে চাইলে আপনাকে চট্টগ্রাম নগরীর অলংকার, এ কে খান মোড় অথবা কদমতলী যেতে হবে। লোকাল বাসে সীতাকুণ্ড যেতে পারবেন ৪০- ৮০ টাকা ভাড়ায়।
ঢাকা থেকে বাসে সীতাকুন্ড: ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল, মহাখালি যে কোন বাস স্ট্যান্ড থেকে চট্রগ্রাম গামী যে কোন বাসে করেই যেতে পারবেন সীতাকুন্ড। বিভিন্ন পরিবহনের নন এসি বাস ভাড়া ৪২০- ৪৮০ টাকা। এসি বাসের ভাড়া ৮০০-১১০০ টাকা।
ঢাকা থেকে ট্রেনে সীতাকুন্ড: ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম গামী যে কোন আন্তঃনগর ট্রেনে এসে ফেনী স্টেশনে নামতে হবে। শ্রেনী ভেদে ট্রেন ভাড়া জন প্রতি ২৬৫-৮০০ টাকা। ফেনী স্টেশন থেকে ১০-১৫ টাকা রিক্সা/অটো দিয়ে ফেনী মহিপাল বাস স্ট্যান্ড যেতে হবে। সেখান থেকে লোকাল বাসে ৫০-৮০ টাকা ভাড়ায় সীতাকুন্ড যেতে পারবেন।
এরপর সীতাকুন্ডের বাস স্ট্যান্ড ব্রীজের নিচ থেকে সরাসরি সিএনজি/অটো নিয়ে গুলিয়াখালি বীচের বাঁধ পর্যন্ত চলে যেতে পারবেন। যাওয়া-আসা সহ রিজার্ভ করে নিতে পারেন। সন্ধ্যা হয়ে গেলে অনেক সময় ফিরে আসার সময় সিএনজি/অটো পাওয়া যায় না।
কোথায় থাকবেন:
সৈকতের কাছে থাকার জন্য কোন আবাসন ব্যবস্থা নেই। সীতাকুণ্ড বাজারে কিছু আবাসিক হোটেল আছে, যেখানে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।। তবে ভালো কোথাও থাকতে চাইলে আপনাকে চট্টগ্রামে চলে যেতে হবে।
এছাড়া এখানে টেলি-যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি ডাকবাংলো আছে। অনুমতি নিয়ে সেখানে থাকার চেষ্টা করতে পারেন। ভালো কোথাও থাকতে চাইলে চট্টগ্রাম অলংকার মোড়ে মোটামুটি মানের ৬০০-১৫০০ টাকায় হোটেলে রাত্রি যাপন করতে পারবেন। এছাড়া স্টেশন রোড, নিউমার্কেট, জিইসি মোড়ের আশেপাশে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেলে রাত্রি যাপন করতে পারবেন।

No comments:

Powered by Blogger.